কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার চন্ডিবের এলাকায় ডোবার পানিতে পড়ে ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় বড় বোন নাজা বেগম আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার (১২ জুন) বিকেল ৪টার দিকে পানিতে ডুবে মারা যায় কিশোর নীরব মোল্লার (১৩)। এরপর রাত ৯টার দিকে ছাদ থেকে লাফ দিলে মৃত্যু হয় বড় বোন নাজা বেগমের (১৮)। মাত্র পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে ভাই-বোনের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের শোকের মাতম চলছে।
মারা যাওয়া দুইজন চন্ডিবের মোল্লা বাড়ির বাছির মোল্লার সন্তান। নীরব স্থানীয় ব্লু বার্ড কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী এবং নাজমা ওরফে নাজা স্থানীয় রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে বাড়ির পাশের জমিতে বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে যায় নীরব মোল্লা। খেলার এক পর্যায়ে জমির পাশে ডোবায় ফুটবল পড়ে যায়। এসময় ডোবার পানি থেকে ফুটবল আনতে গিয়ে তলিয়ে যায় নীরব। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে নীরব মোল্লার মৃত্যু সংবাদ শুনে স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্রপাতি ভাঙচুর, কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রওশন আরা রিপা, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সেলিম মিয়াকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এছাড়াও এসময় একটি প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্তব্যরত নার্স খাদিজা বেগম ও স্টাফ শাহজালালকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
অপরদিকে ছোট ভাই নীরব মোল্লার মৃত্যুর সংবাদ শুনে বড় বোন নাজা বেগম শোকাহত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তিনি বাড়ির ছাদে গিয়ে লাফ দিয়ে নীচে পড়েন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
পরে তাকে উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। এ প্রসঙ্গে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মদ জানান, হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ভাঙচুর ও কর্তব্যরত চিকিৎসকসহ অন্য স্টাফদের লাঞ্ছিত হওয়ায় ঘটনায় কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জনের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম জানান, পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নীরবের মরদেহ বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বড় বোনের মরদেহ বাড়িতে আনার পর আরও একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হবে।